কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয় এসইও ফ্রেন্ডলি
ব্লগিং বর্তমানে একটা জনপ্রিয় পেশায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে অনেক তরুণ-তরুণী ব্লগিং পেশায় নিয়োজিত আছে। লেখালেখি করে আয় করার অন্যতম একটা সেরা ও নির্ভরশীল মাধ্যম হলো ব্লগিং করে আয়। আজকের আলোচনার বিষয় কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয় এসইও ফ্রেন্ডলি এই নিয়ে। শুধু লিখলেই সেটাকে একটা ব্লগ আর্টিকেল হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। একটা সুন্দর আর্টিকেল লেখার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
আপনি যদি এসইও অপটিমাইজ করে আর্টিকেল লিখতে পারেন তবেই অনলাইন থেকে আয় করা সম্ভব হবে। একটা হাই কোয়ালিটি ইউনিক আর্টিকেল লেখার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে এসইও সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করে নিতে হবে। আপনি হয়তো নিজেই অনেক সময় গুগলে বিভিন্ন রকম আর্টিকেল সার্চ করে পড়ে থাকেন। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছেন কি !
আপনি কিন্তু ঐসব আর্টিকেল করে কখনোই বিরক্ত বোধ করেন না। কিন্তু কেন এমন হয় আপনি কি জানেন! এখন আপনাকে আমি সেটার কারণ জানাতে যাচ্ছি। আমরা সচরাচর গুগলে যেসব আর্টিকেল প্রথম পেজে আসতে দেখি সেগুলো খুব বেশি এসইও অপটিমাইজ করে লেখা বলে প্রথম পেজে আসে। একটা এসইও ফ্রেন্ডলি ব্লগ আর্টিকেল লেখার পূর্বে কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয়।
Table of Contents
কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয়
তো আমরা আজকে জানবো কিভাবে একটি আর্টিকেল লিখতে হয় ও বাংলা এসইও ফ্রেন্ডলি ব্লগ আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন তবে অবশ্যই আপনি একটি হাই কোয়ালিটি এসইও ফ্রেন্ডলি ব্লগ আর্টিকেল লিখতে পারবেন।
আপনি যদি একজন প্রফেশনাল ব্লগার হতে চান তবে আজকে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এছাড়া যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার হতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি উত্তম হবে। একজন প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার হতে হলে আপনাকে নিয়মিত প্র্যাকটিস করতে হবে। শুধু আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লেই আপনি কোন প্রফেশনাল রাইটার হতে পারবেন না। একটা পোষ্ট করেই কখনো একজন প্রফেশনাল রাইটার হওয়ার কথা একদিনে ভাববেন না।
আপনার আর্টিকেল প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করুন
আর্টিকেল পড়ে যেন পাঠক বিরক্ত না হয় এজন্য আপনাকে আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত লেখা লিখতে হবে। আপনার লেখা আছে এমন ভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন পাঠক আপনার লেখার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে কৌতুহলী হয়ে পড়তে থাকে।
লেখার ভিতরে কৌতূহল সৃষ্টি করতে পারলে পাঠক কখনো আপনার লেখার প্রতি বিরক্ত হবে না। এজন্য একটি আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে খুব বেশি তথ্যবহুল হতে হবে এবং লেখাকে কার্যকরী করার লক্ষ্যে লিখতে হবে।
নিয়মিত আর্টিকেল পড়ুন
আপনি যখন কোন একটা টপিকে লেখালেখি শুরু করবেন ঠিক তার পূর্বে আপনাকে ঐ টপিকের উপর অনেক বেশি পড়াশোনা করে আসতে হবে। আপনার লেখা টপিক সম্পর্কে যত বেশি আপনার সম্যক ধারণা থাকবে ততবেশি সুন্দর করে আপনি আর্টিকেল লিখতে পারবেন।
তাই আপনাকে আর্টিকেল লেখার চেয়ে আর্টিকেল পড়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একটা সুন্দর হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল লেখার জন্য আপনার আত্মবিশ্বাস এর প্রয়োজন পড়বে যেটি আপনি বেশি বেশি আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে পেয়ে যাবেন।
কিওয়ার্ড রিসার্চ করা
একটা হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল লেখার পূর্বে আপনাকে সর্বপ্রথম টপিক সম্পর্কিত কিওয়ার্ডগুলো ভালোভাবে রিসার্চ করে নিতে হবে। কিওয়ার্ড রিসার্চ করার মাধ্যমে আপনি পাঠকের চাহিদা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস বা ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারবেন।
আপনার আর্টিকেলটি যদি কোন ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে ব্লগিং করে আয় করতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করে আসতে হবে। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন ইঞ্জিনে মানুষ কী ধরনের কিওয়ার্ড নিয়ে বেশি সার্চ করছে এবং কী ধরনের কিওয়ার্ড নিয়ে অনেক বেশি লেখা আর্টিকেল আছে সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে।
আপনি কিওয়ার্ড রিসার্চ করে এমন কিওয়ার্ড নির্বাচন করবেন যেগুলো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে অনেক বেশি সার্চ হয় কিন্তু খুব বেশি আর্টিকেল অনলাইনে নেই। একজন নতুন ব্লগার হিসেবে আপনাকে প্রথম অবস্থায় লোক কম্পিটিশন কিন্তু হাই সার্চ ভলিউম রয়েছে এমন কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই সফলতা লাভ করতে পারবেন।
আর্টিকেলের সূচিপত্র তৈরি করা
আর্টিকেল এর সূচিপত্র বলতে বোঝায় আপনি লিখিত ঐ আর্টিকেল এ কী কী লিখেছেন সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা। আপনি আর্টিকেলের বিষয়টিকে তালিকা করে সাজিয়ে দিতে পারবেন। নিচের উদাহরণের মত করে একটা সূচিপত্র তৈরি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় :
- আর্টিকেল কী
- আর্টিকেল কয় প্রকার
- আর্টিকেল লিখে আয় করার উপায়
- বাংলা আর্টিকেল রাইটিং
- আর্টিকেল লেখার নিয়ম
- উপসংহার
আকর্ষণীয় সূচনা তৈরি করা
আপনি একটা পরিপূর্ণ আর্টিকেল লেখার পূর্বে চাইলে ছোট্ট করে আকর্ষণের একটা সূচনা তৈরি করে নিতে পারবেন। এতে পাঠকের মধ্যে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার প্রতি কৌতুহল বা আকর্ষণ তৈরি হবে। আপনাকে অবশ্যই একটা সুন্দর করে সূচনা তৈরি করতে হবে ১০০-২০০ শব্দের মধ্যে। নতুবা কোন পাঠক আপনার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে না।
ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ ট্যাগ ব্যবহার করা
আপনার সম্পূর্ণ আর্টিকেলকে ছোট ছোট ভাগ করে প্যারাগ্রাফ তৈরি করে নিতে হবে। ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ তৈরি করে নিলে পাঠকের পড়ার অনেক সুবিধা হয়। পাঠক দীর্ঘক্ষন আর্টিকেল পড়ার প্রতি মনোযোগ দিতে পারে। আর্টিকেলের ভিতরে খুব বড় বড় প্যারা করলে অথবা কোন ধরনের ব্যাগের ব্যবহার না করলে পাঠক আর্টিকেল করতে করতে একসময় বিরক্ত বোধ করতে পারে।
পাশাপাশি আপনার আর্টিকেল এর সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি পাবে। যেটা আপনার আর্টিকেলটিকে হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল এ রুপান্তর করবে।
হেডিং ব্যবহার করা
আপনার কনটেন্টটি আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে হেডিং ব্যবহার করতে ভুলবেন না। হেডিং বলতে কোন কিছু শিরোনামকে বোঝায়। আপনার লেখায় হেডিং ব্যবহার করবেন অবশ্যই। হেটিং ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ৬ ধরণের ট্যাগ রয়েছে। H1, H2, ও H3 এই তিনটা ট্যাগ আপনি আপনার আর্টিকেল এ ব্যবহার করতে পারেন।
এটা আপনার লেখার আকর্ষণ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি অনপেজ এসইওতে অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে। একটা মানসম্মত আর্টিকেল লেখার জন্য অবশ্যই হেডিং যোগ করতে হবে।
বিষয় সম্পর্কিত ইমেজ যোগ করা
আপনার লিখিত আর্টিকেলটি হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল এ রুপান্তর করার জন্য অবশ্যই বেশি বেশি ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। আর্টিকেল এর ভিতরে ইমেজ ব্যবহার করলে সেটি মানুষের কাছে সহজে বোধগম্য হয়।
লেখাকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য ইমেজ ব্যবহার করতে হবে এবং আপনাকে অবশ্যই অল্টার ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে। আপনি আপনার টপিক রিলেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করে এটি করতে পারেন যেটা আপনার অনপেজ এসইওতে ভূমিকা রাখবে।
রেফারেন্স দেওয়া
আপনার লেখাটা বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য অবশ্যই বিভিন্ন উৎস দিয়ে আর্টিকেল লিখবেন। নতুন কোন কীওয়ার্ড আপনার সামনে আসলে সে সম্পর্কিত বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকরী ওয়েবসাইটের রেফারেন্স হিসেবে দিতে পারেন। এটা করলে অনপেজ এসইও হবে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার নিজের আর্টিকেলটির খুব ভালো এসইও হয়ে যাবে। সঠিক জায়গায় সঠিক ওয়েবসাইটের রেফারেন্স লিংক দিবেন যেটা আপনার পাঠকদের বুঝতে সাহায্য করবে।
ইন্টারনাল লিংকিং করা
আপনার লেখা আর্টিকেলটি আরো বেশি তথ্যবহুল করার জন্য সেই টপিক সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেলগুলোর লিংক বিভিন্ন অংশের সংযোজন করে দিতে পারেন। এতে কোন পাঠক এসে আপনার কোন একটা আর্টিকেল পড়ে সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটের পেজভিউ বেশি হবে যেটি আপনার ইনকামের উপর প্রভাব ফেলবে।
পাশাপাশি ইন্টারনাল লিংকিং করার ফলে আপনার ওয়েবসাইটের এসইও হবে যেটি আপনার ওয়েবসাইটটি রেংকিং করতে সহায়তা করবে।
আমাদের কথা
আজকে আমাদের পোস্টের মূল বিষয় ছিল আর্টিকেল লেখার নিয়ম। আশা করি কিভাবে একটা আর্টিকেল লিখতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উপরের উল্লেখিত নিয়মগুলো অনুসরণ করলে অবশ্যই একটা হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল লিখতে সক্ষম হবেন।