কিভাবে গুগল থেকে টাকা আয় করা যায় জেনে নিন

বর্তমানে পুরো বিশ্ব অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। গুগল পরোক্ষভাবে পুরো পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে এবং ধারণা করা হয় একটা সময় পুরো পৃথিবীকে প্রত্যক্ষভাবে শাসন করবে গুগল কর্তৃপক্ষ। আজ আমরা মূলত আলোচনা করব গুগল থেকে টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে।

বর্তমানে সবাই গুগল নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। গুগল থেকে অনলাইনে অনেক উপায়ে অর্থ উপার্জন করা যায়। আজ আমরা কোন গুগল জব নিয়ে আলোচনা করব না, আজকে আমরা আলোচনা করবো গুগলের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করে কিভাবে অনলাইন থেকে টাকা আয় করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত একটা আর্টিকেল।

গুগল বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম সেরা টেক জায়ান্ট কোম্পানি। গুগলের অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আমরা অনলাইন থেকে খুব সহজে অর্থ প্রয়োজন করতে পারব। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় : ইউটিউব, অ্যাডসেন্স, অপিনিয়ন রেওয়ার্ডস ও গুগল প্লে ইত্যাদি।

বর্তমানে ধীরে ধীরে গুগল থেকে আয় করা লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি নিজেও গুগল থেকে নানা উপায় অবলম্বন করে আয় করে থাকি। আপনি গুগলের বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহার করে সেগুলো থেকে অর্থ প্রদান করতে সক্ষম হবেন।

এত সংক্ষেপে এখন আমরা জেনে নেবো গুগল থেকে আমরা কিভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারব ? গুগল থেকে অর্থ উপার্জনের উপায় সমূহ :

  • গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল কিংবা অ্যাপ তৈরি করে আয় করা যায়।
  • ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেখান থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং ও গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করা যায়।
  • গুগল প্রোডাক্ট blogger .com ব্যবহার করে আয় করা যায় ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে।
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সংক্ষেপে এসইও শিখে আয় করতে পারবেন।
  • গুগল প্লে ব্যাবহার করে অ্যাপ বিক্রির মাধ্যমে আয় করতে পারেন।

উপরে উল্লেখিত উপায়গুলো থেকে অনেকে প্রতিমাসের লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে সক্ষম হয়েছেন। আপনি যদি গুগলের কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইন থেকে আয় করতে চান তবে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়তে ভুলবেন না।

কিভাবে গুগল থেকে টাকা আয় করা যায়

আমরা সংক্ষেপে জানলাম কিভাবে গুগল ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করা যায় সে সম্পর্কে। এখন নিচে আমরা একটু বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করব কিভাবে গুগল থেকে আয় করা যায়।

গুগল এডসেন্স থেকে আয়

আমরা ইতিপূর্বেই বলেছি গুগল এডসেন্স হলো বর্তমানে অনলাইন থেকে আয় করার সবচেয়ে সেরা ও জনপ্রিয় একটা উপায়। বর্তমানে তাই গুগল এডসেন্সকে সবাই সোনার হরিণ বলে আখ্যায়িত করে। অনলাইন থেকে আয় করার বর্তমানে সোনার হরিণ খ্যাত সেই গুগল এডসেন্স সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। এডসেন্স হলো গুগলের একটা জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন সেবা।

অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করে থাকে মানুষ গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে। গুগল এডসেন্স হলো অ্যাড পাবলিশার কোম্পানি। এটি ব্যবহার করে মূলত ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল বা সফটওয়্যার তৈরি করে সেগুলো মনিটাইজ করে আয় করা সম্ভব হয়।

গুগল এডসেন্স বর্তমানে অনেক বেশি নির্ভরশীল একটা বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। মানুষ এটাকে এখন আয়ের অন্যতম সেরা নির্ভরশীল উৎস বলে বিবেচনা করছে। পৃথিবীর অধিকাংশ ওয়েবসাইট নির্মাতাগণ গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করে থাকেন। পাশাপাশি ইউটিউব চ্যানেল নির্মাতারা গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে তাদের চ্যানেল থেকে উপার্জন করেন।

অধিকন্তু সফটওয়্যার নির্মাতারা গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে সেখান থেকে আয় করেন। গুগল এডসেন্স মূলত একটা বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক সেখানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে।

গুগল এডসেন্স সেটাকে কাস্টমাইজ করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ইউটিউব চ্যানেল ও অ্যাপে প্রদর্শন করিয়ে নিজে উপার্জন করে এবং তাদের পাবলিশারদের উপার্জন করার একটা ব্যবস্থা করে দেয়।

আপনি নিজের একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে সেটা মনিটাইজ করে গুগল থেকে ইনকাম করতে পারবেন। আপনি গুগলের ব্লগস্পট অথবা ওয়াডপ্রেস ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন খুব সহজেই। এরপর আপনি নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করে সেটাকে গুগল অ্যাডসেন্স মনিটাইজ করে উপার্জন করতে পারবেন।

এছাড়া আপনার যদি ইউটিউব চ্যানেল থাকে সেটা ব্যবহার করে গুগল থেকে আয় করা সম্ভব। পৃথিবীর অধিকাংশ ব্লগার বা ইউটিউবার গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে তাদের উপার্জন করে থাকেন। গুগল এডসেন্স এর নাম শুনে নাই এমন কোন ব্লগার বা ইউটিউবার পৃথিবীতে বিদ্যমান নেই। অধিকাংশ ইউটিউবার তাদের আয়ের মাধ্যম হিসেবে গুগল এডসেন্স নির্বাচন করে।

আপনি একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাদের নিয়মিত মানসম্মত কোয়ালিটি ভিডিও আপলোড করে সেটা মনে করে আয় করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেলের কিছু নিয়ম অনুসরণ করে আপনাকে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে যেতে হবে। এরপর তাদের শর্ত মোতাবেক 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম 1000 সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হলে আপনি গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

গুগল আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি রিভিউ করে দেখবে যদি কোন পলিসি ভায়োলেশন না থাকে তবে আপনাকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের অনুমোদন দেবে। এরপর আপনি সেটা ব্যবহার করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে খুব ভালো পরিমাণ ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।

গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করার সর্বশেষ উপায়টি হলো সফটওয়্যার তৈরি করে সেটির মাধ্যমে আয় করা। আপনি যদি একজন অ্যাপ ডেভেলপার হয়ে থাকেন তাহলে সেটির মাধ্যমেও গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করা যায়।

এজন্য আপনার অ্যাপটি মনিটাইজ করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরী করে নিয়ে অ্যাপগুলোকে অ্যাপ্রুভ করে নিতে হবে। তো আমরা জানলাম গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করা সেরা তিনটি উপায় সম্পর্কে। এডসেন্স থেকে আয়ের উপায় সম্পর্কে আপনি বিশদভাবে জানতে পারবেন এখান থেকে

ইউটিউব : সেরা ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট

ইউটিউব বর্তমানে সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট। আশা করছি এই কথায় কেউ সন্দেহ প্রকাশ করবে না। একটা ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেটাকে বিভিন্ন উপায়ে আয়ের মাধ্যম হিসেবে পরিণত করা যায়। আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে কিভাবে সেখান থেকে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করা যায়।

এখন আমরা জানবো গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করার পরিবর্তে আরো কী কী উপায়ে ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করা যায় সে সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা। ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে আপনি চাইলে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে বেশ কয়েকটি উপায় করা যায়। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য কিছু উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করা
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা
  • স্পনসর্শিপ করে আয় করা
  • অনলাইন টিউটর হয়ে আয় করা
  • অনুদান এর মাধ্যমে আয় করা
  • নিজস্ব পণ্য বিক্রি করে আয়

তো এখন আমরা জানবো সংক্ষেপে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন। ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পূর্বে প্রথমে আপনাকে একটা বিষয় নির্বাচন করে নিতে হবে। তারপরে সেই বিষয় সম্পর্কিত সুন্দর একটা ইউটিউব চ্যানেল নাম বাছাই করতে হবে। তারপর সুন্দর করে একটা ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেগুলো ডিজাইন করতে হবে।

এরপর নিয়মিত আপনাকে কোয়ালিটি সম্পন্ন বিষয় সম্পর্কিত ভিডিও তৈরি করতে হবে। আপনি আপনার বিষয় সম্পর্কিত ভিডিও তৈরি করে সেই ভিডিওর ডেসক্রিপশনে বর্ণনা দিতে হবে। আপনাকে সম্পর্কিত কিছু ট্যাগ অ্যাড করে নিতে হবে।

এভাবে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে তখন তাদের কন্ডিশন ফিলাপ হবে তখন মনিটাইজ করে আয় করতে পারবেন।

গুগল প্লে স্টোর ব্যবহার করে আয়

আপনি গুগল প্লে-স্টোর ব্যবহার করে সেখানে অ্যাপ পাবলিশ করার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে অ্যাপ পাবলিশ করার ও ডাউনলোড করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো গুগল প্লে স্টোর।

গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ পাবলিশ করার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করতে হবে। তারপর সেখানে অ্যাপ পাবলিশ করার অনুমোদন পাবে। গুগল এডসেন্স এর একটি সেবা হলো এডমোব যেটি ব্যবহার করে অ্যাপ থেকে আয় করা যায়। বর্তমানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের ইনকামের সেরা উৎস হল এটি।

আপনি এখানে অ্যাপস বিক্রির পাশাপাশি আপনার অ্যাপ এ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করিয়ে আয় করতে পারবেন।

গুগল থেকে আয়ের অনেক অনেক উপায় রয়েছে। আমি শ্রেষ্ঠা করেছি আমার আইডিয়া থেকে আপনাকে কিছু জানানোর। আপনি আরও বেশ কিছু জানতে পারবেন এই সাইটে গিয়ে।

আমাদের কথা

এই ছিল আজকে আমাদের মূল আলোচনা। আজকের আর্টিকেল Google থেকে টাকা আয় করার উপায় পড়ে আশা করি উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি গুগল থেকে আয় করতে চান তাহলে উপরে উল্লেখিত উপায়গুলো দেখতে পারেন। আমি উপরে কিছু জনপ্রিয় সেরা কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করেছি।

এরকম অনলাইন থেকে আয় সম্পর্কিত আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের ঘোরাঘুরি করতে পারেন। আমরা নিয়মিত এ বিষয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button